বেশির ভাগ মানুষের খুব সাধারণ একটি অসুখ হচ্ছে জয়েন্টে ব্যথা। আর শীতকাল বিশেষ করে বাত রোগীদের জন্য যেন এক বিভীষিকার নাম। যত ঠান্ডা পড়ে, জয়েন্টের ব্যথাও তত বাড়ে। যা অসহনীয় পর্যায়ে চলে যেতে পারে।
জয়েন্টে ব্যথার ফলে নড়াচড়ার ক্ষমতা কমে যায়, অর্থাৎ জয়েন্ট শক্ত হয়ে গেছে মনে হয়। তবে হতাশ হবেন না। শীতকালে জয়েন্টের ব্যথা কমানোর কিছু কার্যকরী উপায় আছে।
* হিটিং প্যাড: অনেক ধরনের ব্যথা কমাতে হিটিং প্যাড ব্যবহার করা যায়। এমনকি এটা বাতরোগ জনিত জয়েন্টের ব্যথাও কমাতে পারে।জয়েন্টের ব্যথা ও অনমীয়তা বেড়ে গেলে যুক্তরাজ্যের ন্যাশনাল হেলথ সার্ভিস (এনএইচএস) হিটিং প্যাড ব্যবহারের পরামর্শ দিয়েছে। তাপ পেশীকে শিথিল করে, নমনীয়তা বাড়ায় ও রক্ত চলাচল বৃদ্ধি করে। তবে জয়েন্ট ফুলে গেলে হিটিং প্যাড ব্যবহার করবেন না, কারণ ফোলা আরো বেড়ে যাবে।
* গরম পোশাক: জয়েন্টে ব্যথার প্রবণতা থাকলে শরীরে ঠান্ডার সংস্পর্শ এড়াতে হবে। বিশেষ করে, গরম পোশাক না পরে বাইরে যাবেন না।হাত ও পায়ে মোজা পরুন। কানটুপি পরুন অথবা মাফলার ব্যবহার করুন। চাদর বা শালকে ভালোভাবে জড়িয়ে নিন। একইসঙ্গে টি-শার্ট, লং স্লিভ শার্ট ও জ্যাকেট পরতে পারেন। সারকথা হলো- আপনি যে ধরনের গরম পোশাকই পরেন না কেন, ঠান্ডা এড়াতে শরীরকে ভালোভাবে ঢাকতে হবে।
* গরম পানি: কুসুম গরম পানিতে জয়েন্টকে ডুবিয়ে রাখলেও ব্যথা ও অনমনীয়তা কমে। এক্ষেত্রে কার্যকারিতা বাড়াতে এপসম সল্ট ও এসেনশিয়াল অয়েল মেশাতে পারেন। সকালে গরম পানিতে গোসল করেও উপকার পেতে পারেন। এতে জয়েন্টের অনমীয়তা কিছুটা হলেও দূর হয়।
* স্ট্রেচিং: অনেক চিকিৎসকই জয়েন্টের ব্যথা ও অনমনীয়তা কমাতে স্ট্রেচিং করতে পরামর্শ দিয়ে থাকেন। অনেক বাত রোগীর পক্ষেই সকালে হাঁটাচলা কঠিন হয়ে পড়ে, কারণ জয়েন্ট খুবই শক্ত হয়ে যায়। তারা স্ট্রেচিং করলে উপকৃত হতে পারেন। সকালে একটু হেঁটে কফি/গ্রিন টি পান করুন। অতঃপর বসে কিছুক্ষণ (১০-১৫ মিনিট) স্ট্রেচিং করুন। জয়েন্ট যতই অনমনীয় থাকুক না কেন, স্ট্রেচিংয়ের পর হাঁটাচলা সহজ হয়ে আসে। আমেরিকান কলেজ অব রিউম্যাটলজি জয়েন্টের নমনীয়তা বাড়াতে সপ্তাহে ৩-৫ বার স্ট্রেচিং করতে বলেছে। ইউটিউবে স্ট্রেচিং সংক্রান্ত প্রচুর ভিডিও পাবেন।
* ফোম রোলিং: জয়েন্টের ব্যথা ও অনমনীয়তা কমাতে ফোম রোলিং করতে পারেন। পা ও নিতম্বের ফোম রোলিং করলে জয়েন্ট উপকৃত হবে। এটা বেশ সহজ। ফোম রোলার কিনে ইউটিউবের ভিডিও দেখে ঘরে ফোম রোলিং করতে পারবেন। কোন ফোম রোলিং এক্সারসাইজ আপনার জন্য সবচেয়ে উপযুক্ত ও নিরাপদ তা জানতে আগে ফিজিক্যাল থেরাপিস্টের সঙ্গে কথা বলা ভালো।
* গ্রিন টি: শীতকালে যেকোনো গরম পানীয় পানেই প্রশান্তি ও উষ্ণতা পাওয়া যায়। তবে যাদের বাতরোগ বা জয়েন্টের ব্যথা আছে তাদের জন্য তুলনামূলক ভালো পানীয় হলো গ্রিন টি। এই চায়ে প্রদাহনাশক উপাদান আছে, যা প্রদাহজনিত ব্যথা কমাতে পারে। তাই যাদের শীতকালে জয়েন্টের ব্যথা বেড়ে যায়, তারা সকালে ও সন্ধ্যায় অন্য পানীয়ের পরিবর্তে গ্রি টি পান করতে পারেন। এছাড়া প্রতিদিন পর্যাপ্ত পরিমাণে সাধারণ পানি পান করতে হবে।
দৈনিক কলম কথা সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।